স্বল্প আয়ের মানুষের পাতে উঠছে না ইলিশ

ইলিশের মৌসুম যাই যাই করছে। তারপরও ভোলার চরফ্যাশনের বাজারে ইলিশ মাছের দাম চড়া। মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও দাম কমেনি। নিম্নআয়ের মানুষেরা ইলিশ পাতে তুলতে পারছেন না।

 

জেলেরা বলছেন, জালে পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা না মেলায় দাম কমছে না।

 

ইলিশ ব্যাপারীরা বলছেন, ভরা মৌসুমেও তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি। তাই জেলেদের চাহিদা (খরচ না ওঠা) এখনো পূরণ হয়নি। তাদের চাহিদা পূরণ হওয়ার পর দাম কমবে।

 

এদিকে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত শুরু হবে প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা। মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। ডিম ছাড়ার পর এমনিতেই ইলিশ মেদহীন ও অপুষ্ট হয়ে যায়। তখন ইলিশের সেই স্বাদ আর থাকে না। ফলে সুস্বাদু ইলিশ খেতে চাইলে কিনতে হবে এই ২২ দিনের মধ্যেই। সেই আশা নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন ক্রেতারা। তবে দাম শুনেই ভ্রু কুঁচকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।

 

চরফ্যাশনের মূল বাজারে এক কেজি ওজনের এক হালি (চারটি) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। জাটকার হালির দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এতে ক্রেতারা অনেকটা হতাশ।

 

জেলে, মাছ ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, কয়েক দিন ধরেই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে। আর তা চরফ্যাশন উপজেলার একাধিক ঘাট থেকে প্রতিদিন নৌ-পথে লঞ্চযোগে, সড়কপথে ঢাকা, চাঁদপুর, বরিশালসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। আর ছোট বড় মিলিয়ে কিছু মাছ বিক্রি হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন মাছ ঘাটে, বাজারে, ফুটপাতে। ইলিশের স্বাদ নিতে সাধারণ মানুষ বেশি দামেই কিনছেন। উপজেলার মাছ বাজার ও মেঘনার তীরবর্তী মাছ ঘাটে গিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর ইলিশ সীমিত আয়ের মানুষের নাগালে নাও পৌঁছতে পারে।

 

উপজেলার সামরাজের আড়তদার বলেন, বাজারে ইলিশের চাহিদা বেশি। তাই দাম এবার তেমন একটা কমার সম্ভাবনা নেই। তবে আমদানি গত দুদিনে অনেক বেড়েছে। এতে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে অর্থাৎ দাম কিছুটা কমতে পারে। দেশে ইলিশের ভরা মৌসুম আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কিন্তু এবার সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়েনি। সেপ্টেম্বরের শেষদিকে বৃষ্টিপাতের দেখা পাওয়ায় কয়েক দিন ধরে ইলিশের আহরণ বেড়েছে।

 

সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুপ হোসেন মিনার বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইলিশের দাম তেমন একটা বাড়েনি। বর্তমানে এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এর থেকে দাম কমে গেলে জেলে থেকে শুরু করে মৎস্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইলিশ ধরা যাবে আর ২১ দিন। এ সময় যদি বিপুল পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে, তাহলেই কেবল সীমিত আয়ের মানুষের পাতে উঠতে পারে। নইলে অতৃপ্তি নিয়েই শেষ হবে এবার ইলিশের প্রধান মৌসুম।

আপনার মন্তব্য জানান

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.